রাতারগুল জলা বন – বাংলার আমাজান
সেই ছোটবেলা থেকে আমরা মুখস্থ করে আসছি, কোন দেশের জন্য নূন্যতম ২৫ শতাংশ বনভূমি থাকা দরকার, আর বাংলাদেশের আছে মাত্র ১৭ শতাংশ………… !!! বাস্তবতা কি এখনো সেরকম? বন-জঙ্গল বললেই আমাদের মাথায় সুন্দরবন আর পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাড়া কিছু আসে না। আমরা অনেক বনের নামই জানি না, আর সে বন কেটে উজাড় হয়ে গেলো কি না তার খবর রাখা তো আরও দূরের কথা। আসুন, দেশের স্বার্থে আমরা বনগুলোকে চিনি, সেগুলাকে ভালোবাসতে জানি।
বাংলাদেশে ন্যাশনাল পার্ক আছে ১৫টি, ওয়াইল্ডলাইফ স্যাংচুয়ারি আছে ১৫টি, ইকোপার্ক আছে সম্ভবত ৮টি, গেম রিজার্ভ একটি।
বনের নাম লাউয়াছড়া
ন্যাশনাল পার্ক –
১। রামসাগর ন্যাশনাল পার্ক – দিনাজপুর
২। হিমছড়ি ন্যাশনাল পার্ক – কক্সবাজার
৩। ভাওয়াল ন্যাশনাল পার্ক – গাজীপুর
৪। মধুপুর ন্যাশনাল পার্ক – টাঙ্গাইল
৫। লাউয়াছড়া ন্যাশনাল পার্ক – মৌলভীবাজার
৬। কাপ্তাই ন্যাশনাল পার্ক – রাঙ্গামাটি
৭। নিঝুম দ্বীপ ন্যাশনাল পার্ক – হাতিয়া
৮। মেদা কচ্ছপিয়া ন্যাশনাল পার্ক – কক্সবাজার
৯। সাতছড়ি ন্যাশনাল পার্ক – হবিগঞ্জ
১০। খাদিমনগর ন্যাশনাল পার্ক – সিলেট
১১। বাড়াইঢালা ন্যাশনাল পার্ক – চট্টগ্রাম
১২। নবাবগঞ্জ ন্যাশনাল পার্ক – দিনাজপুর
১৩। সিংড়া ন্যাশনাল পার্ক – দিনাজপুর
১৪। বীরগঞ্জ ন্যাশনাল পার্ক – দিনাজপুর
১৪। কাদিগড় ন্যাশনাল পার্ক – ময়মনসিংহ
১৫। আলতাদীঘি ন্যাশনাল পার্ক – নওগাঁ
ওয়াইল্ডলাইফ স্যাংচুয়ারি (বন্যপ্রাণী অভয়াশ্রম)
১। চর কুকরি মুকরি ওয়াইল্ডলাইফ স্যাংচুয়ারি – ভোলা
২। পাবলাখালি ওয়াইল্ডলাইফ স্যাংচুয়ারি – খাগড়াছড়ি
৩। চুনাতি ওয়াইল্ডলাইফ স্যাংচুয়ারি – চট্টগ্রাম
৪। সুন্দরবন (পূর্ব) ওয়াইল্ডলাইফ স্যাংচুয়ারি – বাগেরহাট
৫। সুন্দরবন (দক্ষিণ) ওয়াইল্ডলাইফ স্যাংচুয়ারি – খুলনা
৬। সুন্দরবন (পশ্চিম) ওয়াইল্ডলাইফ স্যাংচুয়ারি – সাতক্ষিরা
৭। রেমা ক্যালেঙ্গা ওয়াইল্ডলাইফ স্যাংচুয়ারি – হবিগঞ্জ
৮। ফসিয়াখালী ওয়াইল্ডলাইফ স্যাংচুয়ারি – চকোরিয়া
৯। হাজারিখিল ওয়াইল্ডলাইফ স্যাংচুয়ারি – সীতাকুন্ড
১০। দুধপুকুরিয়া – ধোপাছড়ি ওয়াইল্ডলাইফ স্যাংচুয়ারি -চট্টগ্রাম
১১। সাঙ্গু ওয়াইল্ডলাইফ স্যাংচুয়ারি – বান্দরবান
১২। দুধ্মুখী ওয়াইল্ডলাইফ স্যাংচুয়ারি – বাগেরহাট
১৩। চাদপাই ওয়াইল্ডলাইফ স্যাংচুয়ারি – বাগেরহাট
১৪। ঢাংমারি ওয়াইল্ডলাইফ স্যাংচুয়ারি – বাগেরহাট
১৫। সোনারচর ওয়াইল্ডলাইফ স্যাংচুয়ারি – পটুয়াখালী
ইকোপার্ক – সাফারি পার্ক
চিরচেনা সুন্দরবন
১। ডুলাহাজরা সাফারি পার্ক – কক্সবাজার
২। সীতাকুন্ড ইকোপার্ক – চট্টগ্রাম
৩। বাশখালী ইকোপার্ক – চট্টগ্রাম
৪। মধুটিলা ইকোপার্ক – শেরপুর
৫। মাধবকুন্ড ইকোপার্ক – মৌলভীবাজার
৬। মুরাইছড়া ইকোপার্ক – মৌলভীবাজার
৭। লাউচাপড়া ইকোপার্ক – জামালপুর
৮। টেংরাগিরি ইকোপার্ক – বরগুনা
৯। বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক – শ্রীপুর, গাজীপুর (নির্মাণাধীন)
বাংলাদেশের একমাত্র গেম রিজার্ভটা টেকনাফে, আর হালের ক্রেজ রাতারগুল হলো একমাত্র সোয়াম্প ফরেস্ট (মিঠাপানির বন), সেটা সিলেটে। বহুল পরিচিত হাম্মাম ঝর্নার অভিভাবক রাজকান্দি একটা রিজার্ভ ফরেস্ট আর পার্বত্য চট্টগ্রামের দুরন্ত গহীনের বনগুলো ঐ তিন ক্যাটেগরীর মধ্যে এখনো কেন আসলো না (অন্তত আমার কাছে থাকা তথ্যানুযায়ী) সেটা বোঝা গেলো না। হয়তো বাঙ্গালীবাবুদের কলুষতার হাত থেকে বাচতেই !!
হাতের মুঠোয় মেঘদল – বান্দরবান
অবসর পেলেই ঘুরে আসতে পারেন মায়াবী এসব বন। দেখুন তার অপার্থিব সৌন্দর্যের পসরা, আর সোচ্চার কন্ঠে প্রতিবাদ করুন বনখেকো লোভী অমানুষদের কাজগুলো, যদি আপনার চোখে পড়ে যায়। তবে হ্যা, যারা বনে-পাহাড়ে বা জঙ্গলে যান কেবল ভোজন করতে, মানে পিকনিক………… তাদের প্রতি করজোড়ে নিবেদন……… পরিবেশের কোন ক্ষতি করবেন না। বোতল – পলিথিন আর ছেড়া প্যাকেট ফেলে এসে সবুজকে কলুষিত করবেন না। লাউড স্পিকারে বনের প্রকৃতিকে “ওয়ান্না বি মাই চাম্মাক চাল্লো” শুনিয়ে কোন লাভ নেই।
প্রকৃতিকে ভালোবাসুন – প্রকৃতি আপনাকে ভালোবাসবে এর শতগুণ।